উলুমুল হাদিস - হাদিসের মৌলিক ধারনা
উলুমুল হাদিস
১. হাদীসঃ
হাদীস আরবী শব্দ। আরবী অভিধান ও কোরআনের ব্যবহার অনুযায়ী হাদীস শব্দের অর্থ -কথা, বাণী, বার্তা, সংবাদ, বিষয়, খবর, ও ব্যাপার ইত্যাদি, পরিভাষায়:
- নবী (সঃ) এর কথা, কাজ ও মৌন সম্মতিকে বলা হয় হাদীস, এক কথায় রাসুল (সঃ) এর নবুয়াতী জীবনের সকল কথা কাজ এবং অনুমোদনকে হাদিস বলে।
- সাহাবাদের কথা, কাজ ও অনুমোদনকে বলা হয় আছার।
- তাবেয়ী ও তাবে তাবেয়ীদের কথা কাজ ও অনুমোদনকে বলা হয় ফতোয়া।
২. সাহাবীঃ
যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (স:) -এর সাহচর্য লাভ করেছেন, তাঁকে দেখেছেন ও তাঁর একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁকে সাহাবী বলে ।
৩. তাবেয়ীঃ
যিনি ঈমানের সাথে কোন সাহাবীর সাহচর্য লাভ করেছেন এবং সাহাবীদের অনুকরণ করেছেন তাঁকে তাবেয়ী বলে ।
৪. তাবে তাবেয়ীঃ
যিনি ঈমানের সাথে কোন তাবেয়ীর সাহচর্য লাভ করেছেন এবং তাবেয়ীদের অনুকরণ করেছেন তাঁকে তাবে তাবেয়ী বলে ।
শ্রেণীবিভাগঃ
১. হাদিসের সংজ্ঞা ভিত্তিক প্রকারভেদঃ তিন প্রকার
- - ক্বওলী হাদিস
- - ফে’লি হাদিস
- - তাক্বরিরী হাদিস
২. রাবী’র সংখ্যার দিক দিয়ে হাদিস ২ প্রকারঃ
- - হাদিসে মুতাওয়াতির
- - হাদিসে ওয়াহিদ
- হাদিসে ওয়াহিদ আবার ৩ প্রকার
- ১. হাদিসে মাশহুর
- ২. হাদিসে আজীজ
- ৩. হাদিসে গরীব
৩. রাবী বাদ পড়ার দিক দিয়ে হাদিস ২ প্রকার
- ১. মুত্তাসিল হাদিস
- ২. মুনকাতি হাদিস
মুনকাতি হাদিস আবার ৩ প্রকার
- ১. মুয়াল্লাক হাদিস
- ২. মুদাল্লাস হাদিস
- ৩. মুরসাল হাদিস
৪. রাবী’র গুণ অনুযায়ী হাদিস ৩ প্রকারঃ
- ১. সহীহ হাদিস
- ২. হাসান হাদিস
- ৩. জয়ীফ হাদিস
৫. সনদের দিক দিয়ে হাদিস তিন প্রকারঃ
- ১. মারফু হাদিস
- ২. মাওকুফ হাদিস
- ৩. মাকতু হাদিস
৬. ত্রুটিপূর্ণ বর্ণনার দিক দিয়ে হাদিস দুই প্রকারঃ
- ১. শায হাদিস
- ২. মুয়াল্লাল হাদিস
হাদিস ও সুন্নাহর পার্থক্যঃ
সুন্নাহ হল রাসুল (সঃ) এর ভাব, কর্মনীতি আর হাদিস বলতে রাসুল (সঃ) এর কথা, কাজ ও সমর্থন কে বুঝায়।
- আছারঃ সাহাবায়ে কেরামের কথা ও কাজ কে আছার বলে।
- সনদঃ হাদিস বর্ণনার ধারাবাহিকতা কে সনদ বলে।
- মতনঃ হাদিসের মূল অংশকে মতন বলে।
- রা’বীঃ হাদিসের বর্ণনাকারীকে রা’বী বলে।
- রেওয়ায়েতঃ হাদিসের বর্ণনাকে রেওয়ায়েত বলে।
- মুহাদ্দিসঃ যিনি হাদিস চর্চা করেন এবং বহু সংখ্যক হাদিসের সনদ ও মতন সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান রাখেন তাকে মুহাদ্দিস বলে।
- মারফুঃ যে হাদিসের বর্ণনা পরম্পরা রাসুল (সঃ) থেকে হাদিস গ্রন্থ সংকলনকারী পর্যন্ত সুরক্ষিত আছে এবং মাঝখান থেকে কোন বর্ণনাাকারীর নাম বাদ পড়েনি তাকে মারফু হাদিস বলে।
- মাওকুফঃ যে হাদীসের বর্ণনা সুত্র শুধু সাহাবী পর্যন্ত পৌছেছে তাকে হাদিসে মাওকুফ বলে।
- মাকতুঃ যে হাদিসের বর্ণনা সুত্র শুধু তাবিঈ পর্যন্ত পৌছেছে তাকে হাদিসে মাকতু বলে।
- মুত্তাসিলঃ যে হাদীসের সনদের ধারাবাহিকতা উপর থেকে নীচ পর্যন্ত পূর্ণরুপে সংরক্ষিত আছে, কোন স্তরেই রা’বীর নাম বাদ পড়েনি তাকে মুত্তাসিল হাদিস বলে।
- মুনকাতেঃ যে হাদীসের সনদের ধারাবাহিকতা রক্ষিত হয়নি, মাঝখানের কোন একস্তরে বর্ণনাকারীর নাম বাদ পড়েছে, তাকে মুনকাতে হাদিস বলে।
- মুরসালঃ সনদের মধ্যে তাবি’ঈর পর বর্ণনাকারীর নাম বাদ পড়লে তাকে মুরসাল হাদিস বলে।
- মু’দালঃ যে হাদিসের সনদের মধ্যে থেকে পর্যায়ক্রমে দুজন বর্ণনাকারীর নাম বাদ পড়ে গেছে তাকে হাদিসে মুরসাল বলে।
- মুদাল্লাসঃ যে সব হাদিসে রাবী উর্ধবতন রাবীর সন্দেহমুক্ত শব্দ প্রয়োগে উল্লেখ করেছেন তাকে মুদাল্লাস হাদিস বলে।
- মুআল্লাকঃ যে হাদিসে সাহাবীর পর এক বা একাধিক রাবীর নাম বাদ পড়েছে তাকে মুআল্লাক হাদিস বলে।
- মুআল্লাালঃ যে হাদিসের সনদে বিশ্বস্ততার বিপরীত কার্যাবলী গোপনভাবে নিহিত থাকে তাকে হাদিসে মুআল্লাল বলে।
- মুযতারিবঃ যে হাদিসের বর্ণনাকারী মতন বা সনদকে বিভিন্ন প্রকার এলোমেলো করে বর্ণনা করেছেন তাকে মুযতারিব হাদিস বলে।
- মুদরাজঃ যে হাদিসের মধ্যে বর্ণনাকারী তাঁর নিজের অথবা কোন সাহাবী বা তাবেঈর অভিব্যক্তি সংযোজন করেছেন তাকে মুদরাজ হাদিস বলে।
- মুসনাদঃ যে মারফু হাদিসের সনদ সম্পূর্ণরূপে মুত্তাসিল তাকে মুসনাদ হাদিস বলে।
- মুনকারঃ যে হাদিসের বর্ণনাকারী দুর্বল এবং তার বর্ণিত হাদিস অপর দুর্বল বর্ণনাকারীর বর্ণিত হাদিসের পরিপন্থি হয় তাকে মুনকার হাদীস বলে।
-মাতরুকঃ হাদিসের বর্ণনাকারী যদি হাদিসের ব্যাপারে মিথ্যা প্রমাণিত না হয়ে কথায় মিথ্যা প্রমাণিত হন তাকে মাতরুক হাদিস বলে।
- মাওদুঃ বর্ণনাকারী যদি সমালোচিত ব্যক্তি হন আর যদি তিনি হাদিস বর্ণনায় মিথ্যাবাদী হন তবে তার বর্ণিত হাদিসকে মাওদু হাদিস বলে।
- মুবহামঃ যে হাদিসের বর্ণনাকারীর সঠিক পরিচয় পাওয়া যায়নি, যার ভিত্তিতে তার দোষ, গুণ বিচারকরা যেতে পারে এমন হাদিসকে মুবহাম হাদিস বলে।
- মুতাওয়তিরঃ যেসব হাদিসের সনদে বর্ণনাকারীর সংখ্যা এত অধিক যে তারা সবাই একযোগে কোন মিথ্যার উপর ঐক্যমত হওয়া অসম্ভব। আর এই সংখ্যাধিক্য যদি সর্বস্তরে থাকে তবে তাকে মুতাওয়াতির হাদিস বলে।
- মাশহুরঃ যেসব হাদিসের বর্ণনাকারীর সংখ্যা তিন বা তিনের অধিক হবে কিন্তু মুতাওয়াতিরের পর্যায় পর্যন্ত পৌছবে না এমন হাদিসকে মাশহুর হাদিস বলে।
- মারুফঃ কোন দুর্বল বর্ণনাকারীর বর্ণিত হাদিস অপর কোন দুর্বল বর্ণনাকারীর বর্ণিত হাদিসের বিরোধী হলে অপেক্ষাকৃত কম দুর্বল বর্ণনাকারীর হাদিসকে মারুফ হাদিস বলে।
- মুতাবিঃ এক রাবির হাদিসের অনুরূপ যদি অপর রাবীর কোন হাদিস পাওয়া যায় তবে দ্বিতীয় রাবীর হাদিসকে প্রথম হাদিসের মুতাবি বলে।
- সহীহঃ যে মুত্তাসিল হাদিসের সনদে উদ্ধৃত প্রত্যেক বর্ণনাকারীই নির্ভরযোগ্য, বিশ্বস্ত, প্রখর স্মরণশক্তি সম্পন্ন এবং হাদিসখানি সকল প্রকার ত্রুটি বিচ্যুতি থেকে মুক্ত তাকে সহীহ হাদিস বলে।
- হাসানঃ যে হাদিসের বর্ণনাকারীর স্মরণশক্তি কিছুটা দুর্বল বলে প্রমাণিত তাকে হাসান হাদিস বলে।
- যায়ীফঃ যে হাদিসের বর্ণনাকারী কোন হাসান বর্ণনাকারীর গুণসম্পন্ন নন তাকে যায়ীফ হাদিস বলে।
- আযীযঃ যে সহীহ হাদিস প্রতিস্তরে কমপক্ষে দু’জন বর্ণনাকারী বর্ণনা করেছেন তাকে হাদিসে আযিয বলে।
- গারিবঃ যে সহীহ হাদিস সর্বস্তরে একজন রাবী বর্ণনা করেছেন তাকে গারিব হাদিস বলে।
- শাযঃ যে হাদিস কোন বিশ্বস্থ বর্ণনাকারী একাকী বর্ণনা করেছেন এবং তার সমর্থনে অন্য কোন বর্ণনা পাওয়া যায়না, তাকে শায হাদিস বলে।
- আহাদঃ যেসব হাদিসের বর্ণনাকারীর সংখ্যা মুতাওয়াতিরের সংখ্যা পর্যন্ত পৌছেনি তাকে আহাদ হাদীস বলে।
- মুত্তাফাকুন আলাইহিঃ যেসব হাদিস ঈমাম বোখারী ও ঈমাম মুসলিম একত্রে স্ব স্ব গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন তাকে মুত্তাফাকুন আলাইহি বলে।
- আদালতঃ বর্ণনাকারী মুসলিম পূর্ণ বয়স্ক জ্ঞানী ফিসকের উপায় উপকরণ থেকে এবং মানবতা বিরোধী কর্মকান্ড থেকে দূরে থাকাকে আদালত বলে।
- যাবতঃ শ্রুত বিষয়কে জড়তা ও বিনষ্ট থেকে এমনভাবে সংরক্ষণ করা যেন তা যথাযথভাবে বর্ণনা করা সম্ভব, তাকে যাবত বলে।
- ছিকাহঃ যে বর্ণনাকারীর মধ্যে আদালত ও যাবত পূর্ণভাবে বিদ্যমান, তাকে ছিকাহ বলে।
- শায়খঃ হাদিসের শিক্ষাদানকারী বর্ণনাকারীকে শায়খ বলে।
- শাইখাইনঃ মুহাদ্দিসদের পরিভাষায় ঈমাম বুখারী ও ঈমাম মুসলিম (রঃ) কে একত্রে শাইখাইন বলে।
- হাফিযঃ যিনি হাদিসের সনদ ও মতনের সমস্ত বৃত্তান্তসহ একলাখ হাদিস মুখস্থ করেছেন তাকে হাফিয বলে।
- হুজ্জাতঃ যিনি তিন লাখ হাদিস আয়ত্ব করেছেন তাকে হুজ্জাত বলে।
- হাকিমঃ যিনি সমস্ত হাদিস সনদ ও মতন সহ মুখস্থ করেছেন তাকে হাকিম বলে।
- রিজালঃ হাদিসের বর্ণনাকারীর সমষ্টিকে রিজাল বলে।
- তালিবঃ যিনি হাদিস শাস্ত্র শিক্ষায় নিয়োজিত তাকে তালিব বলে।
- হাদিসে কুদসীঃ যে হাদিসের মূলভাব মহান আল্লাহর এবং ভাষা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এর নিজস্ব তাকে হাদিসে কুদসী বলে।
- দেরায়াতঃ হাদীসের মূল বিষয়ে অভ্যন্তরীন সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে যে সমালোচনা করা হয় তাকে দেরায়াত বলে । - রেজালঃ হাদীসের রাবী সমষ্টিকে রেজাল বলে ।
- আ‘দেলঃ যে ব্যক্তি ‘তাকওয়া ও মরুওত’ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন তাকে আ‘দেল বলে।
- ছেকাহ্ঃ যে ব্যক্তির মধ্যে আদল গুন পরিপূর্ণভাবে পাওয়া যাবে তাকে ছেকাহ্ বলে ।
- আসহাবে সুফ্ফাঃ যে সকল সাহাবী সব সময় রাসূল (স:) সাহচর্যে থাকতেন তাঁর আদেশ নিষেধ শুনতেন ও কন্ঠস্থ করতেন এই নির্দিষ্ট সংখ্যক সাহাবীদেরকে ‘আসহাবে সুফ্ফা’ বলে ।
- মুহাদ্দিসঃ যিনি হাদীস শাস্ত্রের পন্ডিত, হাদীস চর্চা করেন এবং বহু হাদীসের সনদ,মতন সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞাণ রাখেন তাকেই মুহাদ্দিস বলে ।
- ফকীহ্ঃ যারা হাদীসের আইনগত দিক পর্যালোচনা করেছেন তাদেরকে ফকীহ্ বলে ।
- সিহাহ্ সিত্তাঃ যে ছয়খানা হাদীস গ্রন্থ ইসলামের ইতিহাসে অধিকতর বিশুদ্ধ বলে প্রমানিত হয়েছে তাকে‘ সিহাহ্ সিত্তা’ বলে ।
ছয়খানা হাদীস গ্রন্থ হলো:
- ১. বোখারী শরীফ
- ২. মুসলিম শরীফ
- ৩. আবু দাউদ শরীফ
- ৪. তিরমিজী শরীফ
- ৫. নাসায়ী শরীফ
- ৬. ইবনে মাজাহ শরীফ ।
- সহীহাইনঃ হাদীস শাস্ত্রে বোখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফকে একত্রে সহীহাইন বলে ।
- সুনানে আরবা’আঃ হাদীস শাস্ত্রে আবু দাউদ শরীফ, তিরমিজী শরীফ, নাসায়ী শরীফ ও ইবনে মাজাহ শরীফকে একসঙ্গে ‘সুনানে আরবা’ বলে ।
- ‘মুত্তাফাকুন আলাইহে যে হাদীস একই সাহাবীর নিকট হতে ইমাম বোখারী ও মুসলিম একই সূত্রে বর্ণনা করেছেন তাকে ‘মুত্তাফাকুন আলাইহে’ বলে ।
- ওহীঃ ওহী শব্দের শাব্দিক অর্থ: ইশারা করা, ইঙ্গিত করা । পরিভাষায়: কিছু লিখে পাঠানো, কোন কথাসহ লোক পাঠানো, অপরের অজ্ঞাতসারে কোন লোককে কিছু জানিয়ে দেয়াকে ওহী বলে।
সর্বাধিক হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবী কে এবং তাঁর বর্ণিত হাদীস সংখ্যাঃ হযরত আবু হুরায়রা (রা:) এবং বর্ণিত হাদীস সংখ্যা ৫৩৭৪
- হাদীসে কুদসীঃ যে হাদীসের মূল কথা সরাসরি আল্লাহর পক্ষ থেকে এসছে সেই হাদীসকেই হাদীসে কুদসী বলে
কোরআন ও হাদীসে কুদসীর পার্থক্যঃ
১ | কোরআন হাদীসে কুদসী কোরআন জীব্রাঈল (আঃ) ছাড়া নাযিল হয়নি ‘লাওহে মাহফুজ’ থেকে অবতীর্ণ | হাদীসে কুদসী ইলহাম বা স্বপ্নযোগে প্রাপ্ত এর ভাষা রাসূল (স:)এর |
২ | কোরআন ছাড়া নামাজ সহীহ হয়না | হাদীসে কুদসী পাঠে নামাজ হয় না |
৩ | অপবিত্র অবস্থায় কোরান স্পর্শ করা হারাম | অপবিত্র ব্যক্তি এমনকি হায়েয নেফাস সম্পন্না নারীও স্পর্শ করতে পারে |
৪ | কোরআন মজীদ শ্রেষ্ঠ মু’জিজা | কিন্তু হাদীসে কুদসী মু’জিজা নয় |
৫ | কোরআন অমান্য করলে কাফের হতে হয় | হাদীসে কুদসী অমান্য করলে কাফের হতে হয় না |
হাদীস সংকলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসঃ
রাসুলুল্লাহ (স.)-এর জীবদ্দশায় হাদীস সংকলিত হয় নি। সাহাবীগণ হাদীস লিখতে শুরু করলে মহানবী (স.) কুরআনের সাথে হাদীসের সংমিশ্রণ এর আশংকায় হাদীস লিখতে নিষেধ করেন। অতএব এরপর তিনি বিশেষ কয়েকজন সাহাবীকে হাদিস লিখতে অনুমতি দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে খলীফা উমর ইব্ন আবদুল আযীয কুরআনের সঠিক মর্ম উপলব্ধি করার জন্য হাদিস সংগ্রহ ও সংকলন করার আহবান জানান। তাঁর আহবানে সর্বপ্রথম ইব্ন শিহাব যুহরী, আবু বকর ইব্ন হাফ্স প্রমুখ হাদিস সংগ্রহ ও সংকলনে এগিয়ে আসেন। অতঃপর ইমাম মালিক মুআল্লাফা, ইমাম শাফিঈ মুসনাদ এবং ইমাম আহমদ মুসনাদ নামে হাদীস সংকলন করেন। পরবর্তীকালে ছয়টি বিশিষ্ট হাদিস গ্রন্থ সংকলিত হয়, যা সিহাহ সিত্তাহ নামে খ্যাত।
সিহাহ সিত্তার পরিসংখ্যান
ক্রম | গ্রন্থ | সংকলক | হাদীস সংখ্যা |
১ | বোখারী শরীফ | আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ইসমাইল আল বুখারী | ৭৩৯৭ |
২ | মুসলিম শরীফ | আবুল হোসাইন মুসলিম ইবনে হাজ্জাজ আল কুশাইরী | ৪০০০ |
৩ | আবু দাউদ শরীফ | ইমাম আবু দাউদ সুলাইমান আল আসাদ সাজিস্তানী | ৪৮০০ |
৪ | তিরমিজী শরীফ | ইমাম আবু ঈসা মুহাম্মদ ইবনে ঈসা আত্ তিরমিযী | ৩৮১২ |
৫ | নাসায়ী শরীফ | আহমদ ইবনে শুয়াইব আন নাসায়ী | ৪৪৮২ |
৬ | ইবনে মাজাহ শরীফ | আবু আব্দুল্লাহ মু: ইবনে মাজাহ আল কাজভীনি | ৪৩৩৮ |
পাঁচ জন বিখ্যাত মুজাদ্দিদঃ
- ১. হযরত শাহ ওয়ালি উল্লাহ দেহলভী (রহ.)।
- ২. হযরত আব্দুল আজিজ দেহলভী (রহ.)।
- ৩. সাঈয়েদ আহমাদ দেহলভী (রহ.)।
- ৪. শাহ ইসমাইল শহীদ দেহলভী (রহ.)।
- ৫. শায়খ আহমাদ শেরহিন্দ মুজাদ্দিদ আলফেসানী (রহ.)।
তিনজন বিখ্যাত মুহাদ্দিসঃ
- ১. শায়খ মুহাম্মাদ ইসহাক দেহলভী (রহ.)।
- ২. শায়খুল হিন্দ মাহমুদুল হাসান দেহলভী (রহ.)।
- ৩. শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দেস দেহলভী
কোন মন্তব্য নেই