মাসয়ালা-মাসায়েল
মাসয়ালা-মাসায়েল
অযুর ফরজ : ৪টি
- ১. সমস্ত মুখমন্ডল ধোয়া।
- ২. দুই হাতের কনুইসহ ধোয়া।
- ৩. মাথা মাসেহ করা।
- ৪. দুই পায়ের টাখনুসহ ধোয়া।
অযুর সুন্নাত পনেরটি :
- ১. আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং আখেরাতে প্রতিদানের নিয়ত করা।
- ২. বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম বলে অযু শুরু করা।
- ৩. মুখ ধোয়ার আগে কব্জি পর্যন্ত দু’হাত ধোয়া।
- ৪. তিন বার কুলি করা।
- ৫. মিসওয়াক করা।
- ৬. নাকে তিনবার পানি দেয়া।
- ৭. তিন বার দাড়ি খেলাল করা।
- ৮. হাত পায়ের আঙ্গুলে খেলাল করা।
- ৯. গোটা মাথা মাসেহ করা।
- ১০. দু’কান মাসেহ করা।
- ১১. ক্রমানুসারে করা।
- ১২. প্রথমে ডান দিকের অংঙ্গ ধোয়া তারপর বাম দিকের।
- ১৩. একটি অঙ্গ ধোয়ার পর পর দ্বিতীয়টি ধোয়া। একটির পর একটি ধুতে বিলম্ব না করা যে, প্রথমটি শুকিয়ে যায়।
- ১৪. প্রত্যেক অঙ্গ তিনবার করে ধোয়া।
- ১৫. অযুর শেষে মসনুন দোয়া পড়া।
অযু ভঙ্গের কারণ সাতটি :
- ১. পায়খানা বা পেশাবের রাস্তা দিয়ে কোন কিছু বের হওয়া।
- ২. মুখ ভরিয়া বমি হওয়া।
- ৩. শরীরের ক্ষত স্থান হইতে রক্ত পুঁজ বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া।
- ৪. থুথুর সাথে তুলনা করলে রক্তের পরিমাণ বেশী হওয়া।
- ৫. চিৎ বা কাত হয়ে হেলান দিয়ে ঘুম যাওয়া।
- ৬. পাগল, মাতাল ও অচেতন হইলে।
- ৭. নামাজে উচ্চ স্বরে হাসলে অযু ভেঙ্গে যায়।
গোসলের ফরয তিনটি :
- ১. কুলি করা।
- ২. নাকে পানি দেওয়া।
- ৩. সমস্ত শরীর ভালভাবে ধৌত করা।
গোসলের সুন্নাত ছয়টি :
- আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং সওয়াবের নিয়তে পবিত্রতা অর্জন করা।
- সুন্নাতের ক্রমানুসারে গোসল করা এবং প্রথমে অযু করা।
- দু’হাত কব্জি পর্যন্ত ধোয়া।
- শরীর থেকে নাপাকি দূর করা এবং ঘষে ঘষে ধোয়া।
- মিসওয়াক করা।
- সারা শরীরে তিনবার পানি দেয়া।
নামাজের ওয়াজিব চৌদ্দটি:
- ১. সূরা ফাতিহা সম্পূর্ণ তেলাওয়াত করা।
- ২. সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলানো।
- ৩. রুকু, সিজদায় এক তাসবীহ পরিমান দেরি করা।
- ৪. রুকু থেকে সোজা হয়ে দাড়ানো।
- ৫. দুই সিজদার মাঝখানে সোজা হয়ে বসা।
- ৬. প্রথম বৈঠক করা।
- ৭. উভয় বৈঠকে তাশাহুদ পড়া।
- ৮. ইমামের জন্য ক্বিরাত আস্তে এবং জোরে পড়া।
- ৯. বিতরের নামাজে দু’আ কূনুত পড়া।
- ১০. দুই ঈদের নামাজে ছয়টি অতিরিক্ত তাকবীর বলা।
- ১১. ফরয নামাযের প্রথম দুই রাক’আতকে কিরাআতের জন্য নির্ধারিত করা।
- ১২. প্রত্যেক রাক’আতে ফরযগুলির তারতীব ঠিক রাখা।
- ১৩. প্রত্যেক রাক’আতে ওয়াজিবগুলির তারতীব ঠিক রাখা।
- ১৪. আস্সালামু আলাইকুম বলে নামাজ শেষ করা।
তায়াম্মুম কখন করতে হয় :
- যখন পানির কোন সন্ধান পাওয়া না যায়।
- শীতের কারণে পানি ব্যবহারে প্রাণনাশের আশংকা হলে।
- বেশী দুর্বলতার কারণে পানি আনতে অক্ষম হলে।
- যানবাহনে পানি ব্যবহারে অক্ষম হলে।
- অযু করতে গেলে নামাজের জামাত ছুটে যাওয়ার আশংকা থাকলে যে নামায পরে পাওয়া যাবে না। যেমন- ঈদের নামাজ।
তায়াম্মুমের ফরজ তিনটিঃ
১. নিয়ত করা
২. সমস্ত মুখ একবার মাসেহ করা
৩. দুই হাত কনুইসহ একবার মাসেহ্ করা।
নামাজের ফরজ চৌদ্দটি- বাহিরে ৭টি ও ভিতরে ৭টি :
ক) নামাজের বাইরের সাত ফরয আহকাম :
- ১. শরীর পাক,
- ২. কাপড় পাক,
- ৩. নামাজের স্থান পাক,
- ৪. সতর ঢাকা,
- ৫. কিবলামুখি হওয়া,
- ৬. নিয়ত করা,
- ৭. ওয়াক্ত মত নামাজ পড়া।
খ) নামাজের ভেতরের সাত ফরয আরকান :
- ১. তাকবীরে তাহরিমা বলা,
- ২. দাড়িয়ে নামাজ পড়া,
- ৩. কিরআত পড়া,
- ৪. রুকু করা,
- ৫. সিজদা করা,
- ৬. শেষ বৈঠকে বসা,
- ৭. ইচ্ছাকৃত সালামের দ্বারা নামাজ শেষ করা।
নামাজের ওয়াজিব সমূহ মোট ১৪টি।
০১. প্রত্যেক নামাজে সুরা ফাতিহা পড়া।
০২. প্রত্যেক নামাজে সুরা ফাতিহার পর সুরা মিলনো
০৩. ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাআতকে কিরাতের জন্য নির্ধারিত করা।
০৪. কিরাআত, রুকু, সিজদার মধ্যে ক্রমধারা বা তারতিব ঠিক রাখা।
০৫. রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানো।
০৬. দুই সিজদার মাঝখানে সোজা হয়ে বসা।
০৭. রুকু, সিজদা, কাওমা, জলসায় কমপক্ষে এক তাসবিহ পরিমাণ স্থির থাকা। যাতে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ যথাস্থানে পৌঁছে যায়।
০৮. তিন বা চার রাকাআত বিশিষ্ট নামাজে দুই রাকাআত পর আত্তাহিয়াতু পড়া বা সম-পরিমাণ সময় বসা।
০৯. প্রথম ও শেষ বৈঠকে আত্তাহিয়াতু পড়া।
১০. জাহেরি নামাজে প্রথম দুই রাকাআত ইমামের জন্য উচ্চস্বরে কিরাআত পড়া এবং সিররি নামাজের মধ্যে ইমাম ও একাকি নামাজির অনুচ্চ শব্দে কিরাআত পড়া।
১১. সালাম ফিরানো। অর্থাৎ ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বলে নামাজ শেষ করা।
১২. বিতরের নামাজের দোয়ায়ে কুনুত পড়ার জন্য অতিরিক্ত তাকবির বলা এবং দোয়ায়ে কুনুত পড়া।
১৩. দুই ঈদের নামাজে ছয় ছয় তাকবির বলা।
১৪. প্রত্যেক রাকাআতের ফরজ এবং ওয়াজিবগুলোর তারতিব (ধারাবাহিকতা) ঠিক রাখা।
দোয়ায়ে কুনুত (বাংলা উচ্চারণ)
“আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্তায়ীনুকা, ওয়া নাস্তাগ্ফিরুকা, ওয়া নু’মিন বিকা, ওয়া নাতাওয়াক্কালু ‘আলাইকা, ওয়া নুছনী আলাইকাল খাইর। ওয়া নাশ কুরুকা, ওয়ালা নাকফুরুকা, ওয়া নাখলাউ, ওয়া নাতরুকু মাঁই ইয়াফজুরুকা আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া লাকানুসল্লী, ওয়া নাসজুদু, ওয়া ইলাইকা নাস’আ, ওয়া নাহফিদু, ওয়া নারজু রাহমাতাকা, ওয়া নাখশা আযাবাকা, ইন্না আযাবাকা বিল কুফ্ফারি মুলহিক”।
অর্থঃ
“হে আল্লাহ! আমরা তোমারই সাহায্য চাই। তোমারই নিকট ক্ষমা চাই, তোমারই প্রতি ঈমান রাখি, তোমারই ওপর ভরসা করি এবং সকল মঙ্গল তোমারই দিকে ন্যস্ত করি। আমরা তোমার কৃতজ্ঞ হয়ে চলি, অকৃতজ্ঞ হই না। হে আল্লাহ! আমরা তোমারই দাসত্ব করি, তোমারই জন্য নামায পড়ি এবং তোমাকেই সিজদাহ করি। আমরা তোমারই দিকে দৌড়াই ও এগিয়ে চলি। আমরা তোমারই রহমত আশা করি এবং তোমার আযাবকে ভয় করি। আর তোমার আযাবতো কাফেরদের জন্যই র্নিধারিত”।
কোন মন্তব্য নেই